Ad Code

Responsive Advertisement

আমরা ইবাদতে স্বাদ পাবো কখন? - Islamic Question Answer

আমরা ইবাদতে স্বাদ পাবো কখন? - Islamic Question Answer

ইবাদত এমন এক বিষয় যা মানুষের কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহর আদেশ পালন ও নিষেধ বর্জন সম্পাদিত হয়। যেমন- নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, মা-বাবার সেবা, আত্মীয়তা রক্ষা, অঙ্গীকার পালন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ, প্রতিবেশী এবং ইয়াতিম-মিসকিন, পথিক, অধীনস্ত মানুষ ও পশু-পাখির হক, দোয়া, জিকির, তেলাওয়াত ইত্যাদি।

অনেকে বলে থাকেন- আমি ইবাদত করি, কিন্তু ইবাদতে মজা পাই না, স্বাদ পাই না। কিন্তু তারা কি জানে ইবাদত করতে হয় পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে। আল্লাহ যেভাবে করতে বলেছেন, সেভাবেই করতে হয়। কারণ তিনি তো আমাদের ইবাদত দেখছেন। 

হাদিসে জিবরিলে বলা হয়েছে, "তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করো, যেন তুমি তাকে দেখছো। যদি দেখতে না পাও, তাহলে বিশ্বাস করো যে, তিনি তোমাকে দেখছেন।"__________(মুসলিম - ৮)

প্রকৃত মুসলমান তার প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করবে। তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলবে। পাপের প্রতি প্রলুব্ধ করার জন্য বহু ধরনের প্রযুক্তি এ যুগে বের হয়েছে। সেসব থেকে সাধ্যমতো দূরে থাকবে। পাপ থেকে তওবা করবে ও নেকির প্রতিযোগিতা করবে। তার ওঠা-বসা সবকিছু হবে তার পালনকর্তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। 

যার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, "বলো, আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ, সবই বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।"

__________(সুরা আনআম - ১৬২)

যিনি যাকে ভালোবাসেন, তিনি তার কথা শুনতে ভালোবাসেন। যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসেন, তিনি অবশ্যই কোরআন ও হাদিস শুনতে ও বুঝতে ভালোবাসবেন। যিনি এগুলো বোঝেন, স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুল যেন তার সঙ্গে কথা বলেন। এই অনুধাবন নিয়ে যিনি কোরআন-হাদিস পাঠ করেন, তিনি যে স্বাদ পান, তা তুলনাহীন। 

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
তবে কি তারা কোরআন অনুধাবন করে না? নাকি তাদের হৃদয়গুলো তালাবদ্ধ?

__________(সুরা মুহাম্মদ - ২৪)

কোনো সৎ কর্মের সুযোগ এলেই সঙ্গে সঙ্গে তাতে অংশগ্রহণ করা সত্যিকার মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সাহাবায়ে কেরাম ইবাদত-বন্দেগি, দান-সদকা ও জিহাদে অংশগ্রহণে পরস্পরে প্রতিযোগিতা করেছেন। কেননা তারা ইবাদতের পূর্ণ স্বাদ ও তৃপ্তি লাভ করেছেন। আল্লাহর ইবাদত যেন বান্দার নিকট নিরেট আচার-সর্বস্ব না হয়ে পড়ে, সেদিকে সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে।

কেননা বর্তমান সময়ে অধিকাংশের ইবাদত রূহ শূন্য আচার-অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। মসজিদের মিনারে সুউচ্চ শব্দে ❛আল্লাহু আকবার❜ ধ্বনিত হচ্ছে অথচ মুসলমান আল্লাহর বিধান ছেড়ে মদ, জুয়া, সুদ, জেনা, চুরি, বেপর্দা প্রভৃতি বিষয়ে নিজেদের প্রলুব্ধ করছে।

কোরআনের আয়াতগুলো তেলাওয়াত আমাদের হৃদয় কম্পিত হয় না। প্রতিদিনের ক্ষমা প্রার্থনা জিহবা ছাড়া হৃদয়কে উদ্বেলিত করে না। এসবের একটাই কারণ- মুসলমান ইবাদতের অর্থ ও স্বাদ দুটিই ভুলে গেছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সচেষ্ট হতে হবে। মুমিন ও মুসলমান তার ব্যক্তি জীবন ও সমাজ জীবনে যত বেশি অনর্থক কথা ও কাজ থেকে দূরে থাকবে সে তত বেশি ইবাদতের স্বাদ পাবে। সফল মুমিনদের গুণাবলি ব্যাখ্যায় আল্লাহ তায়ালা বলেন, ❛যারা অনর্থক ক্রিয়া-কলাপ থেকে নির্লিপ্ত।

__________(সুরা মুমিনুন - ৩)

অন্যত্র তিনি বলেন, ❛যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন ভদ্রভাবে সে স্থান অতিক্রম করে।

__________(ফুরকান -৭২)

রাসুল (সা.) বলেন, ❛ইসলামের একটি সৌন্দর্য হচ্ছে- অনর্থক কর্মকাণ্ড পরিহার করা।

__________(ইবনে মাজা - ৩৯৬৭)

আল্লাহ আমাদের তাঁর ইবাদতের স্বাদ আস্বাদনের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করার তাওফিক দান করুন। আমিন। 


Post a Comment

0 Comments

Close Menu