আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত: 


মহান আল্লাহ বলেনঃ "অবশ্যই নামাজ অশ্লীল ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে।"

(সূরা আনকাবূত, আয়াত-৪৫)

🔵হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ "তোমরা ভেবে দেখ, তোমাদের কারোর দরজার সামনে দিয়ে একটা নদী থাকে এবং সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কোন ময়লা থাকবে কি?"
সাহাবাগণ বললেন, "না,  তার শরীরে কোন ময়লা থাকবে না।"

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের এটিই হচ্ছে দৃস্টান্ত। এ নামাজগুলির মাধ্যমে আল্লাহ গুনাহসমূহ মুছে দেন।

(ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। রিয়াদুস সালেহিন ১০৪২ খন্ড-৩)

🔵 হযরত জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ পাঁচটি নামাজের দৃস্টান্ত হচ্ছেঃ একটি প্রবহমান বড় নদী তোমাদের কারোর ঘরের দরজার সামনে দিয়ে। তাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে

(ইমাম মুসলিম হাদিসটি উদ্ধৃত করেছেন। রিয়াদুস সালেহিন ১০৪৩, খন্ড-৩)

🔵হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি এক স্ত্রীলোককে চুমা দেয়। তারপর সে নবী (সাঃ) এর খেদমতে হাজির হয়ে তাকে একথা জানায়। ফলে আল্লাহ নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন (অনুবাদ) "নামাজ কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে আর রাতের প্রথমাংশে। অবশ্যই ভাল কাজগুলা খারাপ কাজগুলোকে খতম করে দেয়" (সূরা হুদঃ ১১৪)

লোকটি জিজ্ঞাস করলো, "এ হুকুম কি আমার একার জন্য?"
তিনি বললেনঃ "আমার উম্মতদের সকলের জন্য।"

(ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম হাদিসটি উদ্ধৃত করেছেন। রিয়াদুস সালেহিন ১০৪৪, খন্ড -৩)

🔵হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও এক জুমুআ থেকে আর এক জুমুআ পর্যন্ত আদায়কৃত নামাজ এর মধ্যকার (সব গুনাহের) জন্য কাফফারা, যাবত না কবীরা গুনাহ করা হয়।

(ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম হাদিসটি উদ্ধৃত করেছেন। রিয়াদুস সালেহিন ১০৪৫, খন্ড-৩)

🔵হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ যদি কোন মুসলমান ফরজ নামাজের সময় হলেই ভালো করে উযু করে তারপর ভয় ও বিনয় সহকারে নামাজ পড়ে, তার এ নামাজ তার আগের সমস্ত গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়, যাবত না সে কবীরা গুনাহ করে। আর এ অবস্থায় চলতে থাকলে সমগ্র কালব্যাপী।

(ইমাম মুসলিম হাদিসটি রিওয়ায়াত করেছেন। রিয়াদুস সালেহিন ১০৪৬, খন্ড-৩)

উপরে বর্ণিত হাদিস এবং এ ধরনের আরো বহু হাদিস থেকে এই সংগে কোরআনী আয়াতের অর্থের প্রেক্ষিতে উলামায়ে আহলে সুন্নাত এ সিদ্ধান্তে পৌছেছেন যে,  আল্লাহর ইবাদত আনুগত্য ও সৎ কর্মসমূহ সম্পাদন করার ফলে সগীরা অর্থাৎ ছোট ছোট গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। 

হাদিসে একথা সুস্পস্ট ভাষায় ব্যক্ত করা হয়েছে এবং কোরআনে "ইল্লাল লামাম" শব্দের মাধ্যমে কবীরা গুনাহগুলোকে এর আওতার বাহিরে রাখা হয়েছে। আর কবীরা গুনাহগুলো খালেস দিলে তওবা ও যথাযথ খেসারত আদায় ছাড়া মাফ হবার কোন পথ নেই। মুহাককিক তথা চিন্তাশীল ও গবেষক আলেমগনের এটাই সম্মত সিদ্ধান্ত।


মহান আল্লাহ আমাদের সকল ছোট বড় গুনাহ থেকে হেফাযতে রাখুন, আমিন।